Air India প্লেন ক্রাশ কি হয়েছিল সেদিন !

২০২৫ সালের ১২ জুন, বৃহস্পতিবার, ভারতের আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১ বিধ্বস্ত হয়েছিল। এই দুর্ঘটনাটি ভারতের ইতিহাসে অন্যতম বৃহত্তম বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

🛫 দুর্ঘটনার বিবরণ

• ফ্লাইট নম্বর: AI171

• বিমান: Boeing 787-8 Dreamliner

• উড়ান রুট: আহমেদাবাদ (ভারত) থেকে লন্ডন গ্যাটউইক (যুক্তরাজ্য)

• উড়ান সময়: ২০২৫ সালের ১২ জুন, দুপুর ১:৩৮ IST

• দুর্ঘটনার স্থান: আহমেদাবাদের মেগানিনগর এলাকায় B.J. মেডিকেল কলেজের ডাক্তারদের হোস্টেলে

বিমানটি উড্ডয়নের প্রায় ৩০ সেকেন্ড পর বিধ্বস্ত হয়, যার ফলে বিমানটির ২৪২ আরোহীর মধ্যে ২৪১ জন নিহত হন। শুধুমাত্র একজন ব্রিটিশ নাগরিক, বিশ্বাশ কুমার রমেশ, জীবিত উদ্ধার হন। এছাড়া, মাটিতে অন্তত ২৮ জন নিহত হন এবং ৬০ জনেরও বেশি আহত হন ।

🧑‍✈️ আরোহী ও নিহতদের পরিচয়

বিমানটিতে ২৪২ জন আরোহী ছিলেন, যার মধ্যে ১২ জন ক্রু সদস্য ছিলেন। আরোহীদের মধ্যে ১৬৯ জন ভারতীয়, ৫৩ জন ব্রিটিশ, ৭ জন পর্তুগিজ এবং ১ জন কানাডিয়ান নাগরিক ছিলেন। নিহতদের মধ্যে বেশ কয়েকজন মেডিকেল কলেজের ছাত্র ছিলেন, যারা হোস্টেলে অবস্থান করছিলেন ।indiatimes.com

🧯 উদ্ধার ও তদন্ত

দুর্ঘটনার পর, ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কর্তৃপক্ষ উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নেন। ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে ।

সম্ভাব্য কারণসমূহ

1. ইঞ্জিন থ্রাস্টের অভাব: প্রাথমিক তদন্তে ইঞ্জিন থ্রাস্টের অভাব বা ইঞ্জিনের কোনো ত্রুটির কারণে বিমানটি সঠিকভাবে উড্ডয়ন করতে পারেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে, বিমানের ইঞ্জিনগুলি অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য হিসেবে পরিচিত, তাই এই তত্ত্বটি আরও তদন্তের প্রয়োজন। investors.com

2. ফ্ল্যাপ ও ল্যান্ডিং গিয়ারের ভুল কনফিগারেশন: বিমান উড্ডয়নের সময় ফ্ল্যাপ সঠিকভাবে সেট করা হয়নি এবং ল্যান্ডিং গিয়ারও সম্পূর্ণভাবে উঠানো হয়নি। ফলস্বরূপ, বিমানটি পর্যাপ্ত লিফট পায়নি এবং স্টল হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, বিমানটি প্রায় ৪০০ ফুট উচ্চতায় পৌঁছানোর পর নোজ ড্রপ করতে শুরু করে, যা এই তত্ত্বকে সমর্থন করে। thetimes.co.uk

3. ইঞ্জিনের ডুয়াল ফেইলিওর: কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, উড্ডয়নের সময় দুটি ইঞ্জিনই ত্রুটির সম্মুখীন হয়েছিল, যার ফলে বিমানটি পর্যাপ্ত শক্তি পায়নি। তবে, এই তত্ত্বটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আরও তদন্ত প্রয়োজন।

4. পাইলটের ভুল: কিছু বিশেষজ্ঞ মনে করছেন, পাইলট হয়তো ভুলবশত ফ্ল্যাপ রিট্র্যাক্ট করার পরিবর্তে ল্যান্ডিং গিয়ার রিট্র্যাক্ট করেছিলেন, যার ফলে বিমানটি পর্যাপ্ত লিফট পায়নি। তবে, পাইলটের অভিজ্ঞতা এবং প্রশিক্ষণ এই তত্ত্বের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়।

তদন্তের অগ্রগতি

ভারতের বিমান দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে। যুক্তরাজ্যের এয়ার অ্যাক্সিডেন্টস ইনভেস্টিগেশন ব্রাঞ্চ এবং যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (NTSB)ও তদন্তে সহায়তা করছে। প্রাথমিকভাবে বিমানের ফ্লাইট ডেটা রেকর্ডার (FDR) উদ্ধার করা হয়েছে, তবে ককপিট ভয়েস রেকর্ডার (CVR) এখনও পাওয়া যায়নি। en.wikipedia.org

তদন্তকারীরা বিমানটির ইঞ্জিন থ্রাস্ট, ফ্ল্যাপ ডিপ্লয়মেন্ট এবং ল্যান্ডিং গিয়ারের অবস্থা নিয়ে তদন্ত করছেন। সিসিটিভি ফুটেজে পাখির আঘাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি, তাই পাখির আঘাতের তত্ত্বটি খারিজ করা হয়েছে। তবে, ফ্ল্যাপ রিট্র্যাকশন এবং ল্যান্ডিং গিয়ারের অবস্থান ভুল হওয়ার কারণে বিমানটি স্টল হতে পারে, যা দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।

চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ হতে এক বছর সময় লাগতে পারে। তবে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ইঞ্জিনের ত্রুটি, ভুল কনফিগারেশন এবং পাইলটের ভুলের সমন্বয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

উপসংহার

এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইট ১৭১-এর দুর্ঘটনার সঠিক কারণ জানতে আরও তদন্ত প্রয়োজন। তবে, প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ইঞ্জিনের ত্রুটি, ভুল কনফিগারেশন এবং পাইলটের ভুলের সমন্বয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পরই সঠিক কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

এই দুর্ঘটনাটি ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী বিমান দুর্ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ।

এই দুর্ঘটনার বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য ও ভিডিও দেখতে, আপনি নিচের লিংকটি দেখতে পারেন:

https://www.youtube.com/watch?v=86j_mqiNFV8